ফেরা এখনো সম্ভব: বিশ্বাস, ধৈর্য আর আল্লাহর পথে ফিরে আসা
আজকে চায়ের দোকানে বসে সবাই চা খাচ্ছিলাম, আমার এক ফ্রেন্ড হঠাৎ আমাকে বললো “আমরা জাহান্নাম সম্পর্কে সবকিছুই জানি, এরপরও কেন আমরা নামাজ পড়ছি না আল্লাহর কথা শুনছি না। এখানে আমাদের বিশ্বাসের ঘাটতি আছে”।
আমার মনে হয় এটা অবিশ্বাস না। বিশ্বাস আছে… কিন্তু সেই অনুভবটা হারিয়ে গেছে।
আমরা সবাই জানি আল্লাহ আছেন। জানি মৃত্যু সত্যি। জানি নামাজ না পড়লে, আল্লাহর নির্দেশ না মানলে এর পরিণতি খারাপ হবে।
তবুও আমরা নামাজ পড়ি না। কুরআন ভুলে যাই। দিন কাটাই এমনভাবে, যেন জবাবদিহি বলে কিছুই নেই।
শয়তান আমাদের এমন এক মায়াজালে ফেলে, যেখানে দুনিয়াটা বেশি “বাস্তব” লাগে, আর আখিরাত শুধু একটা দূরের কল্পনা মনে হয়।
আমরা নামাজ পড়ি না, কারণ ভয়টা গভীর না। আমরা বদলাই না, কারণ ভালোবাসাটা গভীর না।
আর একটা আসল কারণ আছে, আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছি। আমরা এমন এক দুনিয়ায় বেঁচে আছি যেখানে সবকিছু তৎক্ষণাৎ চাই। দ্রুত রেজাল্ট, দ্রুত শান্তি, দ্রুত পরিবর্তন।
কিন্তু আল্লাহর পথে ফল আসে ধীরে। নামাজে শান্তি আসে সময় নিয়ে, দোয়ার জবাব আসে তখনই, যখন সময় ঠিক হয়। কিন্তু আমরা চাই এখনই। আজ নামাজ পড়লাম, কালই যেন সব বদলে যায়। আর যখন সেটা হয় না, আমরা হতাশ হয়ে পড়ি।
আসলে আল্লাহর পথে হাঁটা মানে দৌড়ানো না। এটা একটা যাত্রা ধীরে, স্থিরভাবে, বিশ্বাস নিয়ে। আল্লাহ কখনো বলেননি যে তুমি একদিনেই বদলে যাবে। তিনি শুধু চান তুমি চেষ্টা করো।
একজন সন্ত্রাসী জানে যে যদি অপরাধ করে তাকে শাস্তি পেতেই হবে, তাই কি হয়তো আইনের আওতায় এনে ফাঁসিও দেয়া হতে পারে।
এরপরেও কি হচ্ছে দেশে কোনভাবে অপরাধ বন্ধ হয়ে গিয়েছে? নাকি তার আইন সম্পর্কে বিশ্বাস নেই যে সে অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে হতে পারে? সে কি দেখছে না যে প্রতিবছর কত মানুষ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হচ্ছে?
রাতে ফোনে স্ক্রল করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লে, ফজরের সময় চোখ খুলে যায়, মনে হয় উঠি… কিন্তু শরীর বলে, “আর পাঁচ মিনিট।” আর ওই পাঁচ মিনিটেই আমরা হেরে যাই। ওখানেই শয়তান জিতে যায়।
কিন্তু এখনো সময় আছে। আল্লাহর দরজা এখনো খোলা। তুমি যত দূরেই চলে যাও না কেন, ফিরে আসার পথ এখনো ঠিক তোমার সামনে।
তোমাদের মত আমিও, আমিও কোন কিছুর ঊর্ধ্বে না। আমিও চেষ্টা করছি আল্লাহর রাস্তায় ফিরে আসার , নিজেকে ধৈর্যশীল করার। আমি শুধু আমার মনের ধারনা করেছি শেয়ার করেছি, আমি হয়তো বা ভুল হতে পারি। আমার জন্য সবাই করবেন, আল্লাহ হাফেজ।